ঢাকা , শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫ , ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কোরবানির ঈদ ঘিরে রাজশাহীতে গরুর হাটে জমজমাট বেচাকেনা, কিছুটা হতাশ খামারিরা


আপডেট সময় : ২০২৫-০৬-০৬ ০০:০৬:২১
কোরবানির ঈদ ঘিরে রাজশাহীতে গরুর হাটে জমজমাট বেচাকেনা, কিছুটা হতাশ খামারিরা কোরবানির ঈদ ঘিরে রাজশাহীতে গরুর হাটে জমজমাট বেচাকেনা, কিছুটা হতাশ খামারিরা


মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: শনিবার দেশে পালিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। মাঝে আর মাত্র দুদিন বাকি। এ ঈদকে ঘিরে রাজশাহীর বিভিন্ন গরুর হাটে এখন জমজমাট বেচাকেনা চলছে। পুঠিয়ার বানেশ্বর, পবার কাটাখালি, বাঘা, চারঘাট, গোদাগাড়ী, মোহনপুর, দুর্গাপুর ও তানোরে হাটের দিনগুলোতে কোরবানির পশু ও মানুষের উপচে পড়া ভীড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। জেলার সিটি বাইপাশ হাট বসছে এখন প্রতিদিন। মঙ্গলবার বানেশ্বর হাটেও ছিলো প্রচুর গরু। বিক্রি বাড়লেও ক্রেতা কম না থাকায় বিক্রেতাদের চাহিদামতো দাম পাচ্ছেন বলে দাবি করেছেন তারা।


এতে তাদের চোখে- মুখে কিছুটা বিরক্ত এবং হতাশার প্রতিচ্ছবিও লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষ করে বাড়িতে ও ছোট ছোট খামারে পালনকৃত গরু-মহিষের মালিকদের মাঝে হতাশা দেখা গেছে। তাদের দাবি, এবার গো-খাদ্যের উচ্চমূল্যের কারণে গরু-মহিষ পালনকারী খামারিরা আশা করেছিলে ৩০ হাজার টাকার ওপরে প্রতি মণ হিসেবে বিক্রি হবে। তবে এবার শুরু থেকেই ৩০ হাজার বা তার নিচেই মণ হিসেবে অনুমাণ করে গরু-মহিষ কেনাবেচা হচ্ছে। এমনকি শেষদিকে এসে দাম আরও কিছুটা কমেছে। ৩০ হাজার টাকার নিচেও প্রতিমণ হিসেবে গরু-মহিষ বিক্রি হচ্ছে।


মঙ্গলবার জেলার পুঠিয়ার বানেশ্বর হাটে আনুমানিক ৫ মণ মাংসের গরু বেচাকেনা হয়েছে ১ লাখ ৪০-৪৫ হাজার টাকার মধ্যে। তবে ছোট আকারের গরুগুলো গড়ে ২৯-৩০ হাজার টাকা মণ হিসেবেই বিক্রি হয়েছে। একই অবস্থা ছিলো আগেরদিন সোমবার কাটখালি ও তাহেরপুর হাটেও। বুধবার (৬জুন) সিটি বাইপাশ ও দুর্গাপুরের গরুহাট। এই দুই হাটে বাজার আরও নামতে পারে বলেও আশঙ্কা করছিলেন ক্রেতা- বিক্রেতারা।


গতকাল সরেজমিন বানেশ্বর হাটে গিয়ে দেখা যায়, হাটে আসছে দেশি ও বিদেশি নানা জাতের প্রচুুর পরিমাণে গরু-ছাগল। রাজশাহীর পাশের জেলা নাটোর থেকেও এসেছিল কোরবানির পশু। এ হাটে বড় আকৃতির ফ্রিজিয়ান, সাহিওয়াল, দেশি-, শাহিওয়াল জাতের গরু বিক্রির জন্য আনা হয়েছে।


তবে বরাবরের মতো দেশি গরুর চাহিদা বেশি হলেও অনেকে বড় আকারের বিদেশি গরুর দিকেও ঝুঁকেতে দেখা যায়। দুর্গাপুরের পালি এলাকার গরু বিক্রেতা আসলাম উদ্দিন বলছিলেন, চলতি বছর গরু পালনের খরচ বেড়েছে। কিন্তু দাম গতবারের মতোই আছে। এ কারণে লাভ তেমন হচ্ছে না। কোনো ক্ষেত্রে লোকশানও হবে কারও কারও। বিশেষ করে যারা বছর ধরে গরু পালন করেছেন, তাদের লাভ হওয়ার চেয়ে লোকশান হওয়ার সম্ভাবনায় বেশি।


বাঘার পাকুড়িয়া এলাকার আরেক খামারি বলেন, ‘গরুর  বাজার ভালো না ভাই। এবার তেমন লাভ হবে না। ৮টি গরু পালন করে বছর শেষে যদি ৪ লাখ টাকাও লাভ না হয়, তাহলে কিভাবে চলবো। কারও কারও তো গাটের (পকেট) টাকাও যাবে। পুঠিয়ার জামিরা এলাকার খামারি বানেশ্বর হাটে নিয়ে এসেছিলেন তিনটি গরু।


তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অন্যান্য বার শেষ দিকে কিছুটা হলেও দাম বাড়ে। কিন্তু এবির দাম আরও কমেছ। হাটে মানুষের চাইতে গরু-ছাগল বেশি। বিক্রিও হচ্ছে বেশি। তার পরেও আমদানী বেশি, তাই দাম কম। তাহলে গরু-ছাগল পালন করে লাভ হবে কি করে।


এদিকে, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন ও জেলা প্রশাসন ও হাট ইজারাদারদেন পক্ষ থেকে হাট ব্যবস্থাপনায় নেওয়া হয়েছে বিশেষ উদ্যোগ। পশু হাটে সিসিটিভি ক্যামেরা, নিরাপত্তা কর্মী, স্বাস্থ্যপরীক্ষা কেন্দ্র, ভেটেরিনারি টিম এবং জাল টাকা সনাক্তকরণ মেশিনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পকেটমার থেকে সাবধান হতে বার বার মাইকযোগে সচেতন করা হচ্ছে।


রাজশাহী সিটি হাটের ইজারাদার আমিনুল ইসলাম বলেন, আমরা গরুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বেচাকেনার পরিবেশ তৈরি করেছি। যেন মানুষ নিরাপদে এবং প্রতারিত না হয়ে কোরবানির পশু কিনতে পারেন।




 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ